Note : জরিপের ফলাফল দেখতে ভোট দিন
14-02-2022 | 09:59 pm
স্বাস্থ্য
ঢাকা: দেশে করোনাভাইরাসে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের ৮৫ ভাগ টিকা নেননি। এছাড়া যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের বেশির ভাগ টিকা নেননি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এজন্য সবাইকে টিকার আওতায় আসতে আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মাঠে, রাজধানীর চারটি হাসপাতালে নতুন করে ১২৬টি ডায়ালাইসিস বেড উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
টিকা কার্যক্রমের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সব মিলিয়ে এখন ১৭ কোটির বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে পেরেছি। আমাদের টার্গেটের প্রায় সাড়ে ১১ কোটি মানুষ ভ্যাকসিন পেয়েছে। হাতে এখন আমাদের ১০ কোটির মতো ভ্যাকসিন আছে। এখনো অনেকেই ভ্যাকসিন নেননি বা নিতে চাচ্ছেন না। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে বর্তমানে কোভিডে মৃত্যুর ৮৫ ভাগ মানুষই নন ভ্যাকসিনেটেড। আক্রান্তেও নন ভ্যাকসিনেটেড মানুষ শীর্ষে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশ কোভিডে এত ভালো করেছে, ভালো চিকিৎসাসেবা ও সময় মতো ভ্যাকসিনেশন কাজ করার কারণেই। এজন্য ভ্যাকসিন নিতে দেশের অবশিষ্ট মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে অন্যতম একটি সভ্য জাতি বলেই দেশের এত বিশালসংখ্যক মানুষ এত স্বল্প সময়েই ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে। আগামীতেও বাংলাদেশ সভ্যতার নজির স্থাপন করবে এবং কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল হবে।
স্বাস্থ্য খাত ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি মোকাবিলায় গোটা বিশ্ব যেখানে টালমাটাল অবস্থায় আছে সেখানে বাংলাদেশ রেমিট্যান্সে ঊর্ধ্বগতিতে রয়েছে, দেশে খাদ্য সংকট হয়নি, মানুষ কোথাও না খেয়ে থাকেনি, দেশের পদ্মা সেতু বাস্তবায়নসহ সকল মেগা প্রজেক্টের কাজ পুরোদমে চলছে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি না কমে আরও বাড়ছে। চারটি নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে, ২০টি নতুন মেডিকেল কলেজ নির্মাণ করা হচ্ছে, দেশের সব জেলা হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ বেড ও ১০ বেডের ডায়ালাইসিস বেড করার কাজ এগিয়ে চলাসহ বর্তমান সরকারের উন্নয়নকাজগুলো দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। এসবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের স্বাস্থ্যখাতের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই।
জাহিদ মালিক দাবি করেন, স্বাস্থ্যখাতের সফলতার কারণেই গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে বাংলাদেশ ১৭ কোটির বেশি মানুষ বা দেশের ৮৫ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে সক্ষম হয়েছে। অথচ আফ্রিকার দেশগুলোতে মাত্র ১২ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। একারণে বাংলাদেশের মানুষ বিদেশে বেশি কাজের সুযোগ পাচ্ছে, ব্যবসার ঊর্ধ্বগতি লাভ করেছে, দেশের অর্থনীতির চাকা চাঙা হয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের বেডের সংখ্যা বাড়ানো প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই হাসপাতালে আগে বেড ছিল ৮০০টি। আমরা এটিকে ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করার মাধ্যমে এখন সাড়ে ১৩শ বেড করেছি। নতুন আরও ২৪০ বেড বৃদ্ধির কাজ চলমান রয়েছে। আজকেই দেশের কুর্মিটোলা, মুগদা, মিটফোর্ড হাসপাতালের সাথে একযোগে আরও ১২৬টি নতুন ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন করা হলো। এই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে উন্নত বিশ্বের হাসপাতালের মতো নতুন ২০টি বেড স্থাপন করা হলো। একই সাথে, ঢাকার হাসপাতালের পাশাপাশি ঢাকার বাইরে আট বিভাগে আটটি ১৫ তলা বিশিষ্ট সমন্বিত ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলেছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) নাজমুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর আহমেদুল কবীরসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।