Note : জরিপের ফলাফল দেখতে ভোট দিন
02-09-2023 | 06:13 pm
শিক্ষা
জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী কাজী সামিতা আশকা আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ৪র্থ বর্ষের (৪৮ ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার সদর উপজেলায়।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী আমবাগান এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে চিকিৎসাকেন্দ্রে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জরুরি ভিত্তিতে সাভারের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আশকার বন্ধুরা জানান, আশকা আমবাগান এলাকায় ৫০ ব্যাচের চারজন জুনিয়রের সঙ্গে বাসা ভাড়া করে থাকতেন। ঘটনার সময় তার রুমমেটরা কেউই বাসায় ছিলেন না। আশকার বন্ধু তুর্য খুলনা থেকে মোবাইল ফোনে তার রুমমেটদের জানালে ঘটনাস্থলে ছুটে যান রুমমেট ও সহপাঠীরা। ভেতর থেকে দরজা বন্ধ অবস্থায় রাত সাড়ে ৮টার কিছু আগে আশকাকে সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তারা। পরে দরজা ভেঙে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে বন্ধুর সঙ্গে কোন ঝামেলার কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে জানা গেছে।
আশকার রুমমেট শর্মী ও মাইশা বলেন, ‘আমরা আজকে কেউই বাসায় ছিলাম না। মাইশা সন্ধ্যার কিছু আগে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আশকাকে তার বন্ধু তূর্যর সঙ্গে ভিডিও কলে ঝগড়া করতে দেখে। পরে রাত সাড়ে ৮টায় তূর্য আশকার বন্ধু সামিহাকে ফোন করে দ্রুত বাসায় যেতে বলে। বাসায় গিয়ে আমরা তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। তখন বাইরে থেকে দরজা ভেঙে আমরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাই। পরে সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে এনাম মেডিকেলে পাঠান।’
আশকার বন্ধু খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাহরিয়ার জামান তূর্য মোবাইল ফোনে জানান, ‘আশকার সঙ্গে আমার তেমন ঝগড়া হয়নি। ওর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলছিলাম। পরে হঠাৎ করে কল কেটে যায়। তাকে না পেয়ে আমি ওর বন্ধুদের বাসায় যেতে বলি।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা ডা. শামসুর রহমান বলেন, রাত ৯টার দিকে সামিতার সহপাঠীরা তাকে চিকিৎসা কেন্দ্রে আনে। তখন তার কোনো নিঃশ্বাস ছিল না। সঙ্গে সঙ্গে তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখানে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হোসনে আরা বলেন, ‘আমাকে শিক্ষার্থীরা ফোন করে দ্রুত একটা অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে দিতে বলে। কিন্তু তারা আমাকে সুইসাইডের কথা জানায়নি। পরে আমরা হাসপাতালে এসে জানতে পারি সে আত্মহত্যা করেছে।’
এনাম মেডিকেলের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. অর্ণব বলেন, ‘আমাদের এখানে তাকে রাত সাড়ে ৯টায় নিয়ে আসা হয়। ইসিজি রিপোর্ট দেখে আমরা বুঝতে পারি অন্তত আধাঘণ্টা আগে তার মৃত্যু হয়েছে। এটা যেহেতু অস্বাভাবিক মৃত্যু, পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর আমরা মরদেহ পরিবারকে বুঝিয়ে দেব।’
সাভার থানার দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল মামুন কবির বলেন, 'প্রাথমিকভাবে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে শনাক্ত করেছি। প্রেমিকের সাথে ঝগড়ার জেরে আত্মহত্যা করতে পারে বলে জেনেছি। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে পরিবারকে মরদেহ বুঝিয়ে দিতে পারব।'